পশ্চিমা সভ্যতার উত্থান ও ক্রমবিকাশ ঘটেছে খোদায়ি কুদরতকে অবিশ্বাস ও অস্বীকার করার মধ্য দিয়ে। নফসের গোলামি ও খাহেশাতের তাবেদারি করার হালাতে। তাদের নেতৃবৃন্দ ও দায়িত্বশীলরা নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য, কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার বাইরে অন্য কিছুর ওপর ভরসা ও বিশ্বাস করে না। নিজেদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের বাইরে অন্য কিছু তারা ভাবে না।
বস্তুবাদী দর্শনের বড় বড় কেন্দ্রগুলো- আমেরিকা ইউরোপ রাশিয়া (চীন ফ্রান্স জার্মানি) কখনো প্রকাশ্য কখনো অপ্রকাশ্যভাবেই গায়েবের ওপর ঈমান তথা অদৃশ্য জগতের ওপর বিশ্বাস, মৃত্যুপরবর্তী জীবন, রুহানিয়াত ও আধ্যাত্মিকতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। আসমানি হুকুম-আহকাম ও নীতি-নির্দেশনার বিপরীত পক্ষ অবলম্বন করে। ঈমান ও বস্তুবাদী দর্শনকে সংঘাতময় অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়ে দেয়। বিশ্বাস ও অবিশ্বাসকে মুখোমুখি করে দেয়। হক ও বাতিলের এবং সত্য ও মিথ্যার লড়াই বাধিয়ে দেয়।
এখন তো সেই সময় ঘনিয়ে এসেছে, যখন সভ্যতা ও বিজ্ঞান তার উদ্ভাবন ও আবিষ্কারের চূড়ান্ত সীমায় গিয়ে ঠেকবে এবং তার সবচেয়ে বড় প্রতিনিধির আবির্ভাব ঘটবে। নবুয়তি যবান সেটার নাম দিয়েছে-দাজ্জাল’, যা একদিকে বস্তু ও শিল্পের চরম উন্নতি ঘটাবে; বিজ্ঞানের চরম উদ্ভাবন ও উৎকর্ষতা সাধন করবে; অপর দিকে কুফর ও নাস্তিকতার বিস্তার ঘটাবে। মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে। ইসলামের সঙ্গে দুশমনি করবে। ইসলামকে হীন ও জঘন্যভাবে প্রতিরোধ ও প্রতিহত করার চেষ্টায় লিপ্ত হবে। ইহুদি-খৃস্টান ও আখেরাতের প্রতি অবিশ্বাসীরা সীমাহীন আরাম-আয়েশ ও ভোগ-বিলাসে ডুবে যাবে। মানুষকে শক্তি ও ক্ষমতার ভক্তি ও পূজা করতে শেখাবে। মেধা ও প্রতিভার অধিকারীদেরকে পূজিপতিদের গোলামি করতে শেখাবে।
তাদের পথ ধরে অন্য জাতি ও সম্প্রদায়রাও রাশি রাশি সম্পদ কামাইয়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। ক্ষমতার জন্য মানুষ উম্মাদ হয়ে যাবে। ইসলাম মানবতা ন্যায় ও ন্যায্যতা বিবেক ও বিবেচনা নিঃশেষ হয়ে যাবে। অনাচারের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়াবে আধুনিক সভ্যতা-দাজ্জালি সভ্যতা।
দাজ্জালি ফেতনা হবে শেষ যুগের সবচেয়ে বড় ফেতনা। সমগ্র দুনিয়ার জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ। বস্তুবাদী সভ্যতা হল যার জন্ম ও বিকাশগার। বিস্তার ও অগ্রগতির কেন্দ্র। কয়েক শ বছর আগেই যে সভ্যতার পত্তন ইউরোপ ও পশ্চিমা দেশগুলোতে ঘটেছে।
সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.