মুমিনদের হৃদয়ের স্পন্দন রসূলুল্লাহ্ মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরিত হয়েছেন। নবীজির সঙ্গে সাক্ষাৎ মুমিনের জন্য পরম সৌভাগ্যের। আর সেই পরম সৌভাগ্যবান ব্যাক্তিরা শুধু পৃথিবীতেই নয় বরং আখিরাতেও বিশেষ মর্যাদার অধিকারী। তবে তিনি আমাদের মত সাধারণ মানুষ হওয়ার কারণে তিনিও মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করেছে। আর সেজন্যই আমরা আর তাকে এই চক্ষু দিয়ে দেখতে পারবো না। তবে স্বপ্নে প্রিয় নবী (সা.) তো দেখতেই পারি।
রসূলুল্লাহ্ মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্নে দেখা বাস্তবে দেখার মতোই। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে আমাকে স্বপ্নে দেখল, সে যেন আমাকে জাগ্রত অবস্থায়ই দেখল। (আবু দাউদ: ৫০২৩)
রসূলুল্লাহ্ মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেউ স্বপ্নে দেখে থাকলে সে যেন বিশ্বাস করে যে সে রাসূলকেই দেখেছে। কেননা শয়তান নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আকৃতি ধারণ করতে পারে না। হাদিসে রসূলুল্লাহ্ মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে স্বপ্নে আমাকে দেখল সে আমাকেই দেখল। কেননা শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না। (বুখারি: ৬৯৯৪)
অন্য হাদিসে বর্ণিত আছে,
যে আমাকে স্বপ্নে দেখল, শিগগিরই সে আমাকে জাগরণে দেখবে অথবা সে যেন আমাকে জাগরণেই দেখল। আর শয়তান আমার রূপ ধরতে পারে না।’ (মুসলিম: ২২৬৬)

আলেমগণ রসূলুল্লাহ্ মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্নে দেখার বিশেষ ৩টি আমল বর্ণনা করেছেন। সেগুলো হলো –
১. অন্তরে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি পূর্ণাঙ্গ বিশ্বাস ও ভালোবাসা ধারণ করা।
২. সুন্নতের অনুসরণ।
৩. বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা।
তোমরা আমার প্রতি বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করো। আমাকে দেখতে পাবে।”(আল-মুস্তাদরাক, হাদীস নং 3316) (ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ২/২৩৪)
তবে দরুদ পাঠ করলে যে শুধু রাসূলকেই দেখবেন এমন নয়। দরুদ পাঠের রয়েছে অনেক ফজিলত।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আছ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, তিনি আল্লাহর রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন,
যে আমার উপর একবার দরুদ পড়বে, বিনিময়ে মহান আল্লাহ তার উপর দশটি রহমত নাজিল করবেন। (মুসলিম ১/১৬৬)
আরেক হাদিসে আছে, হজরত আনাস (রা.) বলেন, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
যে আমার উপর একবার দরুদ পড়বে আল্লাহ তার উপর দশটি রহমত নাজিল করবেন, তার দশটি গুনাহ ক্ষমা করা হবে এবং দশটি দরজা বুলন্দ হবে। (নাসায়ি ১/১৪৫)
সর্বোপরি, স্বপ্নে প্রিয় নবী (সা.) -কে দেখার জন্য কিংবা সান্নিধ্য অর্জনের জন্য তার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও পূর্ণ বিশ্বাস রেখে, দরুদ পাঠ, সুন্নতের অনুসরণ করতে হবে। আসুন, আমরা সবাই রসূলুল্লাহ্ মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পথ অনুসরণ করি।